প্রথমত: সমাজতন্ত্র উদৎপাদন ব্যবস্থার সর্বোচ্চ বিকাশের স্তরের উপর সর্বোতভাবে নির্ভরশীল । সমাজতন্ত্রের সর্ব নিম্ন স্তর হলো পুজিঁবাদের সর্বোচ্চ স্তর । সম্পদের অসম বন্ঠনের কারণে বর্তমান বিশ্বে বহু সমস্যা বিরাজমান । তার একমাত্র সমাধানই হলো সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং মানুষ মানুষ কে শোষন করবেনা এই নীতির ভিত্তিতে গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিলিবন্ঠনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা । মাক্র্স,এ্েঙ্গলস,লেনিন এবং ট্্রটস্কির কোন লেখায় আপনি কোথাও খোঁজে পাবেন না যে, তাঁরা কোন একটিমাত্র দেশে সমাজতন্ত্র কায়েমের ধারনা উত্থাপন করেছেন । ষ্টালিনের জাতিয়তাবাদী চিন্তায় একদেশে সমাজতন্ত্রের ধারনাটি এসেছে । যা ছিল সম্পুর্ণভাবেই অমার্ক্সীয় । অথচ মার্ক্সবাদ হলো সেই মতবাদ যা সবসময় আর্ন্তজাতিকতাবাদের দৃষ্টিভঙ্গি পোষন করে ।
এই শতাব্দীতে শ্রমিকশ্্েরণীর প্েক্ষ সমাজতান্ত্রিক রূপান্তরের অনেক সুযোগ এসেছিল এবং বিভিন্ন দেশে চেষ্টাও করেছে । তবে শুধুমাত্র একটিতে সফল হয়েছে, ১৯১৭ সালে রাশিয়ার বিপ্লবে এবং তা ও ছিল সাময়িক । বিপ্লবটি সফলতা পায় অপেক্ষাকৃত অনুন্নত দেশে । ্প্রায় ১০০০ বছরের পুরাতন জার একনায়কতন্ত্রের নির্মমতার পতন ঘটায় বিপুল সাফল্যের সাথে । এর পর শ্রমিকশ্রেণী সমগ্র সমাজ ব্যবস্থাটাকে করায়ত্ব করার প্রচেষ্টা চালায় । তবে মহান লেনিনের শুধুমাত্র একদেশে সমাজতন্ত্র কায়েম করার উদ্দেশ্য বা অভিপ্রায় ছিল না । মূলত: ইহা হলো একটি অসম্ভব ব্যপার, কেননা সমাজতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন সমাজের চাহিদার আলোকে পর্যাপ্ত উৎপাদন ব্যবস্থার নিশ্চয়তা । এর জন্য প্রয়োজন হলো আর্ন্তজাতিক পরিসম্পদের আহরন করার ব্যবস্থা থাকা। আর এর জন্যই কোন একটিমাত্র দেশে সমাজতন্ত্রকে পুজিঁবাদের উপর বিজয়ী করা মোটেই যথেষ্ট নয়। বিপ্লবকে অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে দিতে হবে, এমনকি সমগ্র বিশ্বের প্রতিটি দেশে ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিচ্ছিন্নতা,পশ্চাদপদতা,গৃহযুদ্ধ,বিদেশী হস্তক্ষেপ এবং আর্মিস-২১ এর হামলার ফলে রাশিয়ার বিপ্লব একটি গতিহীনতার বেড়াজালে আটকে যায় । অর্থনৈতিকভাবে আরো অনেক অগ্রসর ইউরূপের দেশগুলোর বিপ্লবী সহায়তা ছাড়া রাশিয়ায় সমাজতন্ত্রের স্থায়ীত্ব সম্ভব নয় । যদি ইউরূপের অন্যান্য দেশে বিপ্লব সাফল্য পেত তবে তারা তাদের প্রযুক্তি,প্রাকৃতিক সম্পদ ও জনশক্তি কে একত্রিত করে বিপুল সাফল্যের সাথে দুনিয়ার বাকী অংশে বিপ্লবকে ছড়িয়ে দিতে পারত । কিন্তু ভিন্ন বাস্তবতায়, বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি আমলাতান্ত্রিক একনায়কত্বের অন্ধকুপে ডুবে গেল মেহনতী মানুষের মহান বিপ্লব। তাই, সমাজতন্ত্রের জন্য লড়াই সংগ্রাম অবশ্যই আর্ন্তজাতিক হতে হবে ।
নোট :আমরা জানি মার্ক্সীয় ব্যাখ্যা অনুসারে অর্থনীতিতে পুঁজির প্রভাব র্সাবজনীন । ইহা কোন একটি দেশে আটকে থাকে না । ছড়িয়ে পড়ে র্সবত্র । উদাহরণ হিসাবে বলা যায় একটি পানি ভর্তি পুকুরের একটি মাত্র কোনাকে যেমন লাল রংগে রঙ্গিন করা সম্ভব নয়, তেমনি একেদেশে সমাজতন্র ও অসম্ভব ।